প্রক্রিয়াজাত খাদ্যগ্রহণ কমালে মৃত্যু ঝুঁকিও কমে  

প্রক্রিয়াজাত খাদ্যগ্রহণ কমালে তা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস করে। গবেষকরা বলছেন স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের মধ্য দিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত ৩ জনের মধ্যে ২ জনের মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব।

গবেষণায় দেখা যায়, হৃদরোগের জন্য খাদ্যাভ্যাস অন্যতম ঝুঁকি সৃষ্টিকারী কারণ, যা সহজেই সংশোধন করা সম্ভব। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে হলে প্রক্রিয়াজাত খাবারের বদলে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে।

মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে বিশেষজ্ঞগণ তাই খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করার পরামর্শ দিয়েছেন, যেমন চিপস এর পরিবর্তে ফল খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও তারা রাতের খাবারে বেশি পরিমাণে শাকসবজি খাওয়ার এবং কম পরিমাণে মাংস খাওয়ার পরামর্শ দেন।

সঠিক খাদ্যাভ্যাস হৃদরোগ প্রতিরোধের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ উপায়, যা শরীরে অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ করে অসুস্থতার হাত থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে। গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে বেশি পরিমাণে মাছ, ফলমূল, শাকসবজি, বাদাম এবং শস্য জাতীয় খাবার গ্রহণের মধ্য দিয়ে ৬ মিলিয়নের বেশি মৃত্যু ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।

গবেষণার প্রধান লেখক ড. সিনিয়াও লিউয়ের মতে, আমাদের প্রতিদিন সামুদ্রিক খাবার থেকে ২০০ থেকে ৩০০ মিলিগ্রাম ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড খাওয়া উচিত এবং আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যভ্যাসে ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম ফল, ২৯০ থেকে ৪৩০ গ্রাম শাকসবজি, ১৬ থেকে ২৫ গ্রাম বাদাম এবং ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম শস্যদানা রাখা উচিত।

ইউরোপীয় হার্ট জার্নালের সমীক্ষা অনুযায়ী সঠিক যত্ন ও ক্লিনিকাল ফলাফলের উপর ভিত্তি করে স্বাস্থ্যকর ডায়েট গ্রহণ করা গেলে বিশ্বব্যাপী ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজের কারণে ঘটা ৬৯ শতাংশ মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব।

স্টেপ ওয়ান ফুডসের প্রতিষ্ঠাতা এবং হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ এলিজাবেথ ক্লোডাস বলেন, “হৃদরোগের জন্য নয়টি বড় ঝুঁকি রয়েছে যার মধ্যে বয়স এবং পারিবারিক ইতিহাস এই দুটি বিষয়ে তেমন কিছু করা যায় না। বাকি সবগুলো পুরোপুরি সংশোধন করা সম্ভব এবং বাকী সাতটির পাঁচটি পুরোপুরি বা আংশিকভাবে খাদ্যাভ্যাস দ্বারা পরিচালিত হয়।”

গবেষণায় ইস্কেমিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর জন্য ১১টি ঝুঁকির কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে:

  • খাদ্যাভ্যাস।
  • উচ্চ রক্তচাপ।
  • উচ্চ সিরাম, কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন (এলডিএল)।
  • কোলেস্টেরল।
  • উচ্চ মাত্রার প্লাজমা গ্লুকোজ।
  • তামাক ব্যবহার।
  • স্থূলতা।
  • বায়ু দূষণ।
  • কম শারীরিক ক্রিয়াকলাপ।
  • কিডনিতে সমস্যা।
  • সীসার বিষক্রিয়া।
  • অ্যালকোহল ব্যবহার।

উল্লেখ্য, ইস্কেমিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৭ সালে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৯০ লক্ষ মানুষ মৃত্যু বরণ করেন।  তথ্যসূত্র: হেলথলাইন।

টাইমস/সুমন/এনজে

Share this news on: